তিনি বলেন, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রায় সবাই মাদকাসক্ত। মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নগরীতে বেড়ে চলেছে ছিনতাইকারী চক্র ও অজ্ঞান পার্টির কার্যক্রম। অনেক ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারস্থ হন না। ফলে এদের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়া গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। র্যাব জানায়, গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী সদস্যরা ঘোরাফেরা করে। তারপর সহজ-সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনো তাদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং বিষাক্ত চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। বিভিন্ন চেতনানাশক বা এ-জাতীয় বিষাক্ত মলমে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এ ছাড়া কখনো ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মুখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুঁড়া বা বিষাক্ত পানীয় স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। ওই সময় ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা স্বজনদের খোঁজে দিশাহারা হয়ে দিগি¦দিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। এই ছিনতাইকারী সদস্যদের ভুক্তভোগীরা খুব কম ক্ষেত্রেই শনাক্ত করতে পারেন। ফলে এরা নির্বিঘ্নে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে ওতপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ছিনতাই কাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের অনেক সময় হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করে না। খিলগাঁও ও মালিবাগ রেলগেট, দৈনিক বাংলার মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক, হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাই কোর্ট ক্রসিং, আবদুল গনি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোররাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি থাকে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- মিজানুর রহমান (২১), সোহেল (২০), মাসুদ রানা (২১), সাব্বির (২২), আবু বকর সিদ্দিক (২২), শাকিল (২০), নাঈম মোল্লা (২০), সালমান (২৬), জালাল হোসেন (২১), শাওন (২২), শহিদুল ইসলাম (৪০), রফিক (৩৩), আজিজুর (৩৬), সৈকত মন্ডল (১৯), আরিফ গাজী (২৬), জনি (১৮), রুবেল (২৮), আফজল (১৮), দ্বীন ইসলাম (২৩), তুহিন (১৮), রবিউল আউয়াল হৃদয় (২২), আরমান (২২), সানোয়ার হোসেন (৩১), রুবেল (৩৪), সোহেল (৩৫), শান্ত (২৫), আজাদ (৩৫), আকাশ (২২), নাইম খান (১৬), আপন মিয়া (২০), নাজমুল হোসেন (২৮), মাসুম মিয়া (২৮), শান্ত (২০), সোহেল মাতব্বর (২৩), হৃদয় (১৯), সোহরাব (১৯) ও ইয়াছিন ব্যাপারী (২২)। সূএ : বাংলাদেশ প্রতিদিন